
সমস্ত ফলই মানব দেহের জন্য উপকারি। মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সুন্দরভাবে জীবন অতিবাহিত করার জন্য দিয়েছে সুন্দর সুন্দর ফলমূল। আর কলা হলো এমন এক মহান উপকারি ফল যা দেহ ও মনের উপর কাজ করতে পারে। দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে, মনের অনেক উপকার করে থাকে। বিষন্নতা, মন খারাপসহ অন্যান্য মনোদৈহিক সমস্যা সমাধানে কলা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কলার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এই পর্বে। Annotatebd সাইটে আপনি নতুন ফলে অনুরোধ করবো এই পোষ্টটি ভালো করে বুঝে পড়তে।
কলার পুষ্টিগুণ প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে
ক্যালরি | ৮৯ কিলোক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ২২.৮ গ্রাম |
আঁশ (ফাইবার) | ২.৬ গ্রাম |
চিনি | ১২.২ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.৩ গ্রাম |
প্রোটিন | ১.১ গ্রাম |
ভিটামিন সি | ৮.৭ গ্রাম |
ভিটামিন বি৬ | ০.৪ গ্রাম |
ফলিক এসিড | ২০ মাইক্রোগ্রাম |
প্যানটনিক এসিড | ০.৩ গ্রাম |
পটাশিয়াম | ৩৫৮ গ্রাম |
ম্যাঙ্গানিজ | ০.৩ গ্রাম |
কলার কিছু উপকার:
ডিপ্রেশন: কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক প্রোটিন, যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন আপনার মনকে রিলাক্স করে, আপনার মুড ভালো করে তোলে, আপনাকে সুখীবোধ করতে সাহায্য করে।
প্রিমেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম (পিএমএস) নারীদের জন্য: কলা খান। ভিটামিন বি৬ রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, যা অপনার মন-মানসিকতা চাঙ্গা করে তুলবে।
এনিমিয়া: কলায় থাকে প্রচুর আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে কলা সাহায্য করে। যা এনিমিয়া রোগের জন্য অত্যন্ত সাহায্যকারী।
রক্তচাপ: কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে এবং এতে লবণ কম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি খুবই ভালো কম্বিনেশন। বলা হয়, স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্যেও কলা উপকারী। মস্তিষ্কে পটাশিয়ামের উপস্থিতি মস্তিষ্ককে দ্রুত শিখতে সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তি ভালো করে তোলে।
পায়খানা: কলায় প্রচুর ফাইবার থাকে। পাকা কলা খেলে পায়খানা নরম হয়। আবার কাচকলা খেলে ডায়রিয়ার সময় উপকার পাওয়া যায়।
বুকজ্বালা: কলায় প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড থাকে। বুক জ্বালা করলে একটা কলা খান।
মাথা ঘোরানো: সকাল ও দুপুরের মাঝে সকাল ১০টায় একটা কলা খেতে পারেন। আপনার রক্তে সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং মাথা ঘোরানো থেমে যাবে।
মশার কামড়: মশার কামড়ে চামড়া ফুলে গেছে? বাজারের কোনো ক্রীম কেনার আগে পাকা কলার খোসা ডলে দেখুন, জ্বালাপোড়া কমে যাবে।
উত্তেজনা/ স্নায়ুচাপ: ভিটামিন বি আপনার স্নায়ুকে শান্ত করে তুলতে সাহায্য করে। পরীক্ষার আগে একটা কলা খান।
অতিরিক্ত ওজন: অনেকে মন খারাপ থাকলে/কাজের অতিরিক্ত চাপ থাকলে নিজের অজান্তেই জাঙ্ক ফুড খেতে থকেন। এ রকম চাপে থাকলে আমাদের ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখা প্রয়োজন, যা প্রতি দুই ঘণ্টায় একটি কলা খেলে ঠিক রাখা সম্ভব।
আলসার: কলা আলসারের জন্য উপকারী। পাকস্থলির অম্লতা কমাতে সাহায্য করে।
তাপমাত্রা: শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে একটি কলা খান।
সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার: এই রোগে ভুক্তভোগীরা কলা খেতে পারেন। কারণ এতে আছে মুড অ্যানহ্যান্সার প্রোটিন ট্রিপটোফ্যান।
ধুমপান: ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং, ধুমপান ছাড়ার জন্য কলার জুড়ি নেই।
স্ট্রোক: গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিনকার খাদ্যাভ্যাসে কলা রাখলে ৪০% স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
স্ট্রোকস: পটাশিয়াম আপনার হার্টবিট ঠিক রাখে। অক্সিজেন মস্তিষ্কে নিয়মিত পৌঁছে দেয়, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে কলায় যা প্রচুর আছে।
আঁচিল: প্রাকৃতিকভাবে আঁচিল থেকে মুক্তি পাওয়ার এটা একটি প্রাচীন উপায়। একটি পাকা কলা নিন। আপনার আঁচিলের ওপর উপুড় করে স্থাপন করুন। এবার তার ওপরে সার্জিক্যাল টেপ পেঁচিয়ে রাখুন।
আপেলের সাথে কলার তুলনা করলে বলতে হয়, এতে আপেলের চেয়ে দ্বিগুণ কার্বোহাইড্রেট আছে, তিনগুণ ফসফরাস আছে, পাঁচগুণ ভিটামিন-এ ও আয়রণ আছে, দ্বিগুণ পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ আছে। আর আছে পটাশিয়াম, যা একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। প্রতিদিন খাদ্যাভ্যাসে কলা রাখুন। আপনার শিশুকেও এই অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। দেশের এই স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের সময় আপনি নিয়মিত কলা খেয়ে সুস্থ থেকে জীবনকে উপভোগ করতে পারেন।
আমাদের এই ছোট আয়োজনটি কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।
ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো তথ্য পেতে ভিজিট করুন.